![]() |
গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে কাল ঢাকার প্রতিটি থানার সামনে মানববন্ধন করবে এনসিপি। |
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর প্রতিটি থানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী আকরাম হুসাইন। একই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশালমিছিল–পরবর্তী এক সমাবেশে বুধবার রাত ৯টার দিকে আকরাম হুসাইন এই ঘোষণা দেন। এর আগে রাত ৮টার দিকে বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মশালমিছিল বের করা হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কারওয়ান বাজার সোনারগাঁও ক্রসিংয়ে শেষ হয়। পরে দলের নেতারা সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এই মিছিলে কয়েক শ নেতা–কর্মী অংশ নেন।মিছিলে নেতা–কর্মীদের ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর; ফ্যাসিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে; গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীরা, হুঁশিয়ার, সাবধান’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী আকরাম হুসাইন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গোপালগঞ্জে যারা হামলা করেছে তাদের সবাইকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বসবাস করছে। তারা দিল্লি থেকে ষড়যন্ত্র করছে। আর দেশে তাদের সন্ত্রাসীরা তা বাস্তবায়ন করছে। গোপালগঞ্জসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের যত সন্ত্রাসী রয়েছে, অতিসত্বর তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে আকরাম হুসাইন বলেন, ‘হামলায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ঢাকার সব থানার সামনে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। পরে সব থানায় স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। দেশের সব রাজনৈতিক শক্তিকে আমাদের এই কর্মসূচির পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার প্রধান সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গোপালগঞ্জের হামলার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। ফ্যাসিবাদের দোসরেরা পরিপূর্ণভাবে মূলোৎপাটিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। আমরা শুরু থেকে গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের দাবি জানালেও একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে সেটির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। সংস্কার আর বিচার না হলে ফ্যাসিবাদ নতুন চেহারায় বাংলাদেশে আবার পুনর্বাসিত হবে। যার নমুনা আমরা গোপালগঞ্জে দেখতে পেয়েছি। তাই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত সব সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে প্রতিটি পাড়া, মহল্লা, মহানগর, জেলা ও উপজেলায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার গোপালগঞ্জে সমাবেশ করতে গেলে বেলা পৌনে দুইটার দিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা চালান। পরে এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার পর দলটির নেতাদের গাড়ি ঘিরে আবার হামলা চালানো হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ