কুড়িগ্রামে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ।

 

জামায়াত নেতা আনিসুর রহমান।

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মামলা থেকে রক্ষা করতে বাবু মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এবং ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযুক্ত জামায়াত নেতার নাম আনিসুর রহমান। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজীবপুর উপজেলা সভাপতি। ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর রাজীবপুর উপজেলা শাখা কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ওই চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। তবে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আনিসুর রহমান।ছড়িয়ে পড়া অডিওতে আনিসুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘বাবু শোনো, তোমার বিষয়ে অফিসার (ওসি) আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমি বলছি, ও আমার ছোট ভাই, বিষয়টা আমি দেখব। তুমি আমার সঙ্গে জরুরি দেখা করো। তোমার যদি একটা পশমের ক্ষতি হয়, আমি রাজীবপুরে দ্বিতীয় দিন আর মুখ দেখাব না।’ অপর প্রান্ত থেকে ওই ব্যবসায়ী কিছু বলতে চাইলে তাঁকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়ে আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমার কথা শোনো, তুমি বেশি কথা বলো কিসের জন্য? আমি তোমাকে যে কথা বলছি, এর থেকে বড় কোনো কথা আছে?’

ওই ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে তাঁর মোটরসাইকেলে ঘোরাঘুরি করেন—এমন একটি ভিডিও আছে। ওই ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘তোমার বিষয়টা আমি দেখব, তুমি ৫০ হাজার টাকা রেডি করো।’বাবু মিয়া বলেন, ‘জামায়াত নেতা আনিসুর আমাকে মামলা ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাইছে। আমি একজন ব্যবসায়ী। অনেক আগে থেকেই আমি রাজীবপুর বাজারে পার্টসের ব্যবসা করে আসছি। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।’

তবে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আনিসুর রহমান মোটরসাইকেলে ঘোরাঘুরির বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর (বাবু মিয়া) কাছে কোনো টাকা চাইনি। এসব ষড়যন্ত্র। ২০১৩ সালে জামায়াতের অফিস ভাঙচুর হয়েছে। আর মামলা হয়েছে ৫ আগস্টের পর। সে সময় তাঁর বয়সও হয়নি। সে মামলার আসামি হয় কীভাবে?’

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের আমির আবদুল মতিন ফারুকী বলেন, বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি নতুন এসেছেন। এরপর একটি মামলাও নথিভুক্ত হয়নি। তাঁর সময় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি থাকে, তাহলে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ