ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ: বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও ধারণ, অতঃপর হুমকি!

 ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ: বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও ধারণ, অতঃপর হুমকি!

ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ: বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও ধারণ, অতঃপর হুমকি!

শিরোনাম: সুদূর যশোর থেকে পঞ্চগড়ে এসে প্রেমিকের কাছেই জিম্মি তরুণী, অশ্লীল ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ।

বিশেষ প্রতিবেদন, পঞ্চগড়:

বিয়ের রঙিন স্বপ্ন চোখে নিয়ে শত শত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু প্রেমিকের আঙ্গিনায় পা রাখতেই সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। উষ্ণ অভ্যর্থনার বদলে জুটল প্রত্যাখ্যান, আর ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে পেলেন ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়ংকর হুমকি। প্রেমের সম্পর্কের বিশ্বাসকে পুঁজি করে অশ্লীল ভিডিও ধারণ এবং তা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের এক যুবকের বিরুদ্ধে।

এই ডিজিটাল প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী রুমা খাতুন (২২) যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার এছার উদ্দীনের কন্যা। অভিযুক্ত যুবকের নাম আব্দুর রহমান (আকাশ), তিনি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের নেপিয়ার রহমানের ছেলে।

ঘটনার সূত্রপাত ও প্রতারণার জাল:

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, आकाशের সাথে রুমা খাতুনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সময়ে মোবাইল ফোনে তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রুমা তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, "আকাশ আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিলে আমি তার প্রতি অন্ধ বিশ্বাস স্থাপন করি। সেই বিশ্বাসের সুযোগে সে ভিডিও কলে আমার সরলতার সুযোগ নেয় এবং তার মন রক্ষার্থে আমাকে নানা অশালীন অনুরোধ রক্ষা করতে বাধ্য করে।"

পঞ্চগড়ে আগমন ও দুঃস্বপ্নের শুরু:

সম্পর্ককে পরিণতি দিতে আকাশ রুমাকে বিয়ের জন্য পঞ্চগড়ে আসতে বলে। প্রেমিকের কথায় বিশ্বাস করে গত ১৮ জুলাই, ২০২৫ (শুক্রবার) রুমা যশোর থেকে পঞ্চগড়ে ছুটে আসেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর পর থেকেই তিনি আকাশের মোবাইল ফোন বন্ধ পান। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আকাশের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হলে সে সাফ জানিয়ে দেয় যে সে রুমাকে বিয়ে করবে না।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, আকাশ তাকে তৎক্ষণাৎ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে এবং হুমকি দিয়ে বলে, "আমার কাছে তোমার নগ্ন ভিডিও আছে। যদি বিয়ে করার জন্য জোর করো বা বাড়াবাড়ি করো, তাহলে সব ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দিয়ে তোমার জীবন শেষ করে দেব।"

আইনের দ্বারস্থ না হয়ে গ্রামে আশ্রয়:

প্রেমিকের কাছ থেকে এমন প্রতারণা ও হুমকির শিকার হয়ে হতবিহ্বল রুমা আইনি আশ্রয়ের পরিবর্তে আকাশের খোঁজে তার গ্রাম টেপ্রিগঞ্জে যান। সেখানে আকাশের ছবি দেখালে গ্রামবাসীরা তাকে শনাক্ত করেন এবং ঘটনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে আপাতত রুমা খাতুনকে অভিযুক্ত আকাশের মামার জিম্মায় রাখা হয়েছে।

প্রেমের নামে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এমন প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনাটি ডিজিটাল যুগে সম্পর্কের বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঝুঁকিকে আবারও সামনে এনেছে। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবার এখন একটি সম্মানজনক ও ন্যায়সঙ্গত সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ